প্রকাশিত: Sat, Apr 20, 2024 1:45 PM
আপডেট: Sun, May 19, 2024 9:16 AM

জাতীয় পতাকা ও শিব নারায়ণ দাস

শামসুদ্দিন পেয়ারা : আজ (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে নয়টায় ঢাকার পিজি হাসপাতালে স্বাধীন বাংলার পতাকার অঙ্কনশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা বাঙালি জাতির গৌরব সদালাপী সর্বজনপ্রিয় সদাহাস্যময় প্রিয়ম্বদ সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিব নারায়ণ দাস অনন্তের যাত্রী হয়েছেন। ইতিহাসের কোনাকাঞ্চিতে জায়গা খুঁজে ফেরা লোকদের নানা জনে জাতীয় পতাকার এটা ওটা করেছিলেন সত্য। সে সবের কৃতিত্ব দাবি করে নানা জনে নানা সময়ে নিজেদের কথা বলেছেন। তবে লাল সূর্যের মধ্যে সোনালী রঙে বাংলাদেশের মানচিত্র এঁকে ওটার পূর্ণ রূপ দেয়ার একক কৃতিত্ব ছিলো শিব নারায়ণ দাসের। যদিও তিনি সেটাকে আদৌ কৃতিত্ব মনে করতেন না বা এ নিয়ে নিজেকে জাহির করতেন না। তিনি আমাদের জাতীয় পতাকার রূপকার ছিলেন না। তবে রূপায়ণকার ছিলেন। পতাকার অঙ্কনশিল্পীতো অবশ্য?ই ছিলেন। 

এ পতাকা কোনো এক ব্যক্তির সৃষ্টি নয়। সে অর্থে পতাকার রূপকার বলতে একজন কেউ ছিলেন না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছোট-বড় গ্রæপের আলোচনা ও পরামর্শ থেকেই জাতীয় পতাকার নকশাটি জন্মগ্রহণ করেছিলো। সব চিন্তাকে জড়ো করে তার প্রথম চিত্ররূপটি দান করেছিলেন শিবু দা। সিরাজুল আলম খানের সামনে বসে, সিরাজুল আলম খানের নির্দেশনা ও তত্ত¡াবধানে এ পতাকার খসড়াটি এঁকেছিলেন তিনি। পতাকা নিয়ে যেমন কোনো বিতর্ক বা সংশয় নেই, পতাকা তৈরিতে শিব নারায়ণ দাসের ভ‚মিকা নিয়েও কোনো বাদানুবাদ নেই। ছিলোও না কখনো। ছাত্রলীগে তখন আঁকিয়ে বলতে কেউই ছিলো না। সবেধন নীলমণি ছিলেন কুমিল্লার ছাত্রলীগ নেতা শিব নারায়ণ দাস। ছবি বা ব্যানার ফেস্টুন ইত্যাদি আঁকার দরকার হলে শিবু দা’কে তলব করা হতো। তিনিও ঝটিতি কুমিল্লা থেকে চলে আসতেন এক বস্ত্রে। কাজ সেরে ফের কুমিল্লা চলে যেতেন।

পতাকার ডিজাইন নির্দিষ্ট হবার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন এটিতে সম্মতিজ্ঞাপন করলেন তখন শিবু দা’কে কুমিল্লা থেকে ঢাকা আসতে বলা হয় পতাকার একটা প্রোটোটাইপ তৈরি করার জন্য। পতাকা ঢাকাতেও তৈরি করা যেতো, কিন্তু সমস্যা ছিলো লাল সূর্যের মাঝখানে সোনালী রঙে বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকাটা। বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকাটা আসলেই একটা কঠিন কাজ। ঢাকার কেউ সে ছবি আঁকতে পারবে না। রঙ তুলির জ্ঞান?ই নেই কারো। কাজেই ভরসা শিব নারায়ণ দাস। তিনি এসে ছুরি-কাঁচি, রঙ-তুলি সুতলি কাগজ কাপড় নানা কিছু মিলিয়ে মিশিয়ে পতাকার একটা প্রোটোটাইপ বানিয়ে দিলেন। সেটাকে ভিত্তি করেই কাপড় কিনে একটা আসল পতাকা বানানো হয়, যেটি পরে তৎকালীন ডাকসুর ভিপি আ স ম আব্দুর রব কলাভবনের সামনে উত্তোলন করেছিলেন। লেখক : মুক্তিযোদ্ধা ও

 সিনিয়র সাংবাদিক